Curricular Adaptation Concept, Needs & Important

 Curricular Adaptation

শ্রেণিকক্ষ একটি গতিশীল ও উৎপাদনশীল স্থান, যেখানে ধারণা, মূল্যবোধ, তথ্য ও জ্ঞান বিনিময় ও প্রসারিত হয়। শ্রেণির সংগঠন এবং এর মৌলিক উপাদান—অর্থাৎ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও পাঠ্যক্রম-শিক্ষণ প্রক্রিয়ার মধ্যকার আন্তঃক্রিয়া—একটি গোষ্ঠীকে "অজানা" অবস্থা থেকে "জানা" অবস্থায় উত্তরণের সুযোগ সৃষ্টি করে।

বিভিন্ন শিক্ষাগত উদ্ভাবন ও উদ্যোগের প্রবর্তনের আলোকে, শ্রেণিকক্ষগুলিকে আরও উন্নত করার জন্য পুনর্মূল্যায়ন ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা জরুরি হয়ে উঠেছে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শ্রেণি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পাঠ্যক্রমের প্রতি মনোযোগ দেওয়া অপরিহার্য। পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত থাকে একটি শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন উপাদান—যেমন সিলেবাস, পাঠ্যপুস্তক, প্রয়োজনীয় শিক্ষণ-উপকরণ, শিক্ষাদান কৌশল/প্রক্রিয়া এবং মূল্যায়ন পদ্ধতি।

সম্প্রতি বছরগুলিতে, সমাবেশন (Inclusion) এর উপর ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের ফলে শিক্ষাবিদ, নীতি-নির্ধারক, গবেষক ও অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টি ভারতের স্কুল ও শ্রেণিকক্ষের প্রতি আকর্ষিত হয়েছে। সংবিধানিক বিধান, শিক্ষার অধিকার আইন (RTE), ২০০৯, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অধিকার আইন (PWD), ১৯৯৫ এবং অন্যান্য পদক্ষেপ ভারতের শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নতি এনেছে।

আমরা লক্ষ্য করছি যে শিক্ষার্থীদের জনসংখ্যার প্রকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে এবং বিশেষ প্রয়োজনীয় শিক্ষার্থীদের মূলধারার শিক্ষায় একীভূতকরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে পাঠ্যক্রমে আরও নমনীয়তা এবং শিক্ষকদের সৃজনশীলতার প্রয়োজন হচ্ছে। বিশেষ শিক্ষাগত প্রয়োজনযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ-প্রাথমিক স্তরে নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমিক নির্দেশিকার অভাব, মৃদু সাধারণ শিখন অক্ষমতাযুক্ত শিক্ষার্থীদের (বিশেষ ও সাধারণ বিদ্যালয়ে) এবং গুরুতর ও গভীর অক্ষমতাযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত পাঠ্যক্রমের ঘাটতি একটি বড় সীমাবদ্ধতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বর্তমান গবেষণা নির্দেশ করে যে বিশেষ প্রয়োজনীয় শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যক্রম প্রণয়নের কোনো সরল সমাধান নেই।

উদ্দেশ্য:

এই ইউনিট সম্পন্ন করার পর, আপনি সক্ষম হবেন:

  • দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যক্রম অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে।
  • ব্যাখ্যা করতে কীভাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যক্রম, পাঠ বা ইউনিট অভিযোজন করা যায়।
  • দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণে শিক্ষকের ভূমিকা বুঝতে।
  • দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যক্রম অভিযোজন কৌশল ও সংশ্লিষ্ট দক্ষতা প্রদর্শন করতে।

পাঠ্যক্রম অভিযোজন ধারণা (Concept of Curricular Adaptation)

২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইন (RTE) শ্রেণিকক্ষের গঠনে পরিবর্তন এনেছে, যার ফলে এখন বিভিন্ন দক্ষতার স্তরের শিক্ষার্থীরা একই শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত রয়েছেন। এটি শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষক এবং পেশাদারদের জন্য একটি স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে—বিশেষ শিক্ষাগত প্রয়োজনীয়তা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করা। "এদেরকে অন্য শিশুদের মতো একই পদ্ধতিতে শেখানো সম্ভব নয়, এবং করা উচিতও নয়।"

পাঠ্যক্রম বলতে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষামূলক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য পরিকল্পিত বা উৎসাহিত সমস্ত শিখন অভিজ্ঞতাকে বোঝায়। এটি পাঠ্যক্রম উন্নয়নকে একটি গতিশীল প্রক্রিয়া হিসেবে দেখে, যা স্থির নয়—বরং ক্রমাগত বিবর্তনশীল। পাঠ্যক্রম এই ধারণা দেয় যে প্রতিষ্ঠান বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে তাদের নিজস্ব প্রয়োজন মেটাতে পাঠ্যক্রমের ব্যাখ্যা ও অভিযোজন করবে।

সাধারণ শিক্ষা পাঠ্যক্রমকে বিশেষ প্রয়োজনীয় শিশুসহ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর চাহিদা অনুযায়ী মানিয়ে নেওয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সূত্র বা পদ্ধতি নেই। প্রতিটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং শ্রেণিকক্ষের কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োজনীয়তা থাকে, তাই অভিযোজনও প্রতিটি পরিস্থিতির জন্য নির্দিষ্ট হয়। মনে রাখতে হবে, পাঠ্যক্রমের সব সময় পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় না।

কিছু মতবাদে বলা হয় যে, নির্দিষ্ট জ্ঞানীয় বিকাশের জন্য আলাদা পাঠ্যক্রম তৈরি করা যায় নাবরং শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত সুবিধা (যেমন ব্রেইল, অডিও উপকরণ) প্রদানই যথেষ্ট। অন্যদিকে, আরেকটি মতবাদ দাবি করে যে বৈচিত্র্য বিবেচনা না করে একটি একক পাঠ্যক্রম ব্যবহার করলে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের ("শ্রেণিকক্ষের পিছনের বেঞ্চে") অবহেলা ও "শিখন সমস্যা"র ভুল লেবেল তৈরি হতে পারেএই দৃষ্টিভঙ্গির সমর্থকরা যুক্তি দেন যে "সমাবেশী স্কুল" তৈরি করা জরুরি—যেখানে পাঠ্যক্রম এতটাই নমনীয় যে সবার প্রয়োজন মেটানোর জন্য অভিযোজন সম্ভব। তাদের মতে, পাঠ্যক্রম একই থাকে, কিন্তু প্রয়োগের সময় বিভিন্ন কৌশল ও অভিযোজন ব্যবহার করা হয়।

পাঠ্যক্রম অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব

জাতীয় পাঠ্যক্রম কাঠামো (এনসিএফ) ২০০৫-এ পাঠ্যক্রমকে "শিশুদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অর্থপূর্ণ অভিজ্ঞতা" হিসেবে গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, "এজন্য শিক্ষার্থী এবং শিখন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের চিন্তাভাবনায় মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।" শ্রেণিকক্ষের সংস্কৃতি এবং শিক্ষাদান-শিখন পদ্ধতির রূপরেখা নির্ধারণে পাঠ্যক্রমের ভূমিকা অপরিসীম, বিশেষ করে সমাবেশী শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের কাজের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

বিদ্যালয়ের উচিত এমন সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা যেখানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা অনুযায়ী শিখন ও অর্জনে সাফল্য লাভ করতে পারে। এটি তখনই সম্ভব যখন শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে পাঠ্যক্রম অভিযোজনের মাধ্যমে প্রতিটি শিশুর বিশেষ চাহিদার প্রতি সাড়া দেন। উপযুক্ত অভিযোজন ছাড়া, কিছু শিক্ষার্থী তাদের সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের সুযোগ পাবে না, আবার কেউ কেউ কখনই সাফল্যের স্বাদ পাবে না। এই বৈচিত্র্য মোকাবেলায় সাধারণ পাঠ্যক্রমে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে অভিযোজন প্রয়োজন হতে পারে:

  • লক্ষ্য ও বিষয়বস্তু
  • পদ্ধতিগত কৌশল
  • শিক্ষাদান সংগঠন
  • সময় ব্যবস্থাপনা
  • মূল্যায়ন দর্শন ও কৌশল

এভাবে জ্ঞান সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় সবার শিক্ষাগত চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

ধরনের অভিযোজন কেবলমাত্র শিক্ষকের একার দায়িত্ব না রেখে সমগ্র প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুসহ সকল শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর শ্রেণিশিক্ষণের কৌশল হিসেবে পাঠ্যক্রম অভিযোজন কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিকভাবে বাস্তবায়িত অভিযোজন শুধু শিক্ষাগত সাফল্যই নয়, শ্রেণিকক্ষের সামাজিক কার্যক্রমেও অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করে। এগুলো বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সাফল্য অর্জনে সহায়ক হতে পারে। অভিযোজন প্রক্রিয়ায় শিক্ষক ও অভিভাবকদের অংশীদারিত্ব তৈরি করে একসাথে মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন করা যায়, যা শিশুর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post