আদর্শবাদ (Idealism):
অর্থ: আদর্শবাদ প্লেটোর 'ধারণার তত্ত্ব' থেকে উদ্ভূত। এটি
একটি দার্শনিক মতবাদ যা ধারণা, অনুভূতি এবং আদর্শকে
বস্তুগত বস্তুগুলির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করে এবং একই সাথে মানব
উন্নয়নকে নৈতিক, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক
মূল্যবোধ অনুসারে হওয়া উচিত বলে জোর দেয় যাতে তিনি জ্ঞান অর্জন করতে পারেন।
সংজ্ঞা: আদর্শবাদ এমন একটি শব্দ যার বেশ কয়েকটি
সম্পর্কিত অর্থ রয়েছে। এটি সরাসরি গ্রীক 'idealisms'
থেকে
এসেছে যা শব্দ ধারণা থেকে উদ্ভূত। আদর্শবাদীদের কাছে 'মন এবং আত্মা'
'পদার্থ
এবং শরীরের' চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আদর্শবাদীরা বিশ্বাস করেন যে ধারণাগুলিই একমাত্র সত্য বাস্তবতা।
পক্ষপোষক:
·
সক্রেটিস
·
প্লেটো
·
ডেকার্ট
·
স্পিনোজা
·
বার্কলে
·
কান্ট
·
ফিচে
·
শেলিং
·
হেগেল
·
গ্রিন
·
জেন্টাইল
·
বেদ, উপনিষদ সহ পূর্বী
পন্ডিতরা যেমন শ্রী অরবিন্দ ঘোষ।
আদর্শবাদের
মৌলিক নীতি:
1. আদর্শবাদীরা বিশ্বাস
করেন যে আধ্যাত্মিক জগৎ বাস্তব এবং চূড়ান্ত সত্য যেখানে বস্তুগত জগৎ ক্ষণস্থায়ী
এবং নশ্বর।
2. তারা বিশ্বাস করে যে
পৃথিবীর শৃঙ্খলা স্থান এবং সময়ে একটি চিরন্তন এবং আধ্যাত্মিক বাস্তবতার প্রকাশ।
3. তাদের মতে ধারণাগুলি
হল চূড়ান্ত বাস্তবতা। তারা চিরন্তন এবং অপরিবর্তনীয়।
4. আদর্শবাদীদের কাছে
মানুষ বস্তুগত প্রকৃতির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মানুষ বস্তুর সম্পর্কে
চিন্তা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
5. আধ্যাত্মিক বা
সাংস্কৃতিক পরিবেশ হল মানুষের নিজস্ব সৃষ্টি। এটি মানুষের সৃজনশীল কার্যকলাপের
একটি ফল।
6. আদর্শবাদ আধ্যাত্মিক
মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। এগুলি হল সত্য,
সৌন্দর্য
এবং সৎতা। এই মূল্যবোধগুলির উপলব্ধি হল ঈশ্বরের উপলব্ধি।
7. আদর্শবাদীরা
বিভিন্নতার মধ্যে ঐক্যের নীতিকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।
8. তাদের কাছে ঈশ্বর
সর্বশক্তিমান এবং সর্বব্যাপী শীর্ষ শক্তি।
9. আদর্শবাদীরা একটি
ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশের উপর জোর দেয়। মানব ব্যক্তিত্ব হল সর্বোচ্চ
মূল্য এবং এটি ঈশ্বরের সর্বোত্তম সৃষ্টিকে গঠন করে।
10. আদর্শবাদীরা বিশ্বাস
করে যে জ্ঞান এবং মূল্যবোধগুলি সার্বজনীন এবং চিরন্তন। এগুলি প্রাপ্তির প্রকৃত
পদ্ধতি হল আমাদের যুক্তি, মানসিক বা আধ্যাত্মিক
দর্শন।
11. তাদের মতে জীবনের এবং
শেখার উদ্দেশ্য হল প্রাকৃতিক মানুষকে আদর্শ মানুষে পরিণত করা, যার শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, আবেগিক, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক
পূর্ণতা থাকে।
আদর্শবাদ
এবং শিক্ষার লক্ষ্য:
আদর্শবাদী
দর্শনের মতে শিক্ষার লক্ষ্যগুলি হল:
1. স্ব উপলব্ধি: আদর্শবাদ স্ব উপলব্ধিকে শিক্ষার একটি
গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করে। এটি স্ব সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান
অন্তর্ভুক্ত করে। শিক্ষার লক্ষ্য হল মানুষকে তার প্রকৃত আত্ম হতে সক্ষম করা।
2. আধ্যাত্মিক উন্নয়ন: শিক্ষার লক্ষ্য হল শিশুর মানসিক, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে উন্নয়ন করা। শিশুদের প্রতি সত্য, সৌন্দর্য এবং সৎতা আরও বেশি করে উত্সাহিত করা উচিত।
3. চরিত্র গঠন: মানুষের মধ্যে নৈতিকতা বিকাশ করা শিক্ষার একটি
গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। আদর্শবাদ চরিত্র নির্মাণ এবং চরিত্র গঠনের উপর জোর দেয়।
শিক্ষার প্রক্রিয়া অবশ্যই গভীর আধ্যাত্মিক দৃঢ়তার দিকে এবং সর্বোচ্চ নৈতিক এবং
আধ্যাত্মিক আচরণের দিকে নিয়ে যেতে হবে।
4. পবিত্র জীবনের
প্রস্তুতি: আদর্শবাদীরা ধরে নেয়
যে শিক্ষা এমন শর্ত তৈরি করা উচিত যা শিশুকে একটি পবিত্র জীবনের জন্য প্রস্তুত
করে।
আদর্শবাদ
(Idealism) এবং এর মূলনীতি:
2. তারা বিশ্বাস করে যে
পৃথিবীর শৃঙ্খলা স্থান এবং সময়ে একটি চিরন্তন এবং আধ্যাত্মিক বাস্তবতার প্রকাশ।
3. তাদের মতে ধারণাগুলি
হল চূড়ান্ত বাস্তবতা। তারা চিরন্তন এবং অপরিবর্তনীয়।
4. আদর্শবাদীদের কাছে
মানুষ বস্তুগত প্রকৃতির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মানুষ বস্তুর সম্পর্কে
চিন্তা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
5. আধ্যাত্মিক বা
সাংস্কৃতিক পরিবেশ হল মানুষের নিজস্ব সৃষ্টি। এটি মানুষের সৃজনশীল কার্যকলাপের
একটি ফল।
6. আদর্শবাদ আধ্যাত্মিক
মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। এগুলি হল সত্য,
সৌন্দর্য
এবং সৎতা। এই মূল্যবোধগুলির উপলব্ধি হল ঈশ্বরের উপলব্ধি।
7. আদর্শবাদীরা
বিভিন্নতার মধ্যে ঐক্যের নীতিকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।
8. তাদের কাছে ঈশ্বর
সর্বশক্তিমান এবং সর্বব্যাপী শীর্ষ শক্তি।
9. আদর্শবাদীরা একটি
ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশের উপর জোর দেয়। মানব ব্যক্তিত্ব হল সর্বোচ্চ
মূল্য এবং এটি ঈশ্বরের সর্বোত্তম সৃষ্টিকে গঠন করে।
10. আদর্শবাদীরা বিশ্বাস
করে যে জ্ঞান এবং মূল্যবোধগুলি সার্বজনীন এবং চিরন্তন। এগুলি প্রাপ্তির প্রকৃত
পদ্ধতি হল আমাদের যুক্তি, মানসিক বা আধ্যাত্মিক
দর্শন।
11. তাদের মতে জীবনের এবং
শেখার উদ্দেশ্য হল প্রাকৃতিক মানুষকে আদর্শ মানুষে পরিণত করা, যার শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, আবেগিক, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক
পূর্ণতা থাকে।
আদর্শবাদ
এবং শিক্ষার লক্ষ্য:
আদর্শবাদী
দর্শনের মতে শিক্ষার লক্ষ্যগুলি হল:
1. স্ব উপলব্ধি: আদর্শবাদ স্ব উপলব্ধিকে শিক্ষার একটি
গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করে। এটি স্ব সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান
অন্তর্ভুক্ত করে। শিক্ষার লক্ষ্য হল মানুষকে তার প্রকৃত আত্ম হতে সক্ষম করা।
2. আধ্যাত্মিক উন্নয়ন: শিক্ষার লক্ষ্য হল শিশুর মানসিক, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে উন্নয়ন করা। শিশুদের প্রতি সত্য, সৌন্দর্য এবং সৎতা আরও বেশি করে উত্সাহিত করা উচিত।
3. চরিত্র গঠন: মানুষের মধ্যে নৈতিকতা বিকাশ করা শিক্ষার একটি
গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। আদর্শবাদ চরিত্র নির্মাণ এবং চরিত্র গঠনের উপর জোর দেয়।
শিক্ষার প্রক্রিয়া অবশ্যই গভীর আধ্যাত্মিক দৃঢ়তার দিকে এবং সর্বোচ্চ নৈতিক এবং
আধ্যাত্মিক আচরণের দিকে নিয়ে যেতে হবে।
4. পবিত্র জীবনের
প্রস্তুতি: আদর্শবাদীরা ধরে নেয়
যে শিক্ষা এমন শর্ত তৈরি করা উচিত যা শিশুকে একটি পবিত্র জীবনের জন্য প্রস্তুত
করে।
5. সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
সংরক্ষণ ও প্রচার: আদর্শবাদীদের মতে
শিক্ষার লক্ষ্য হল শিশুকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত করা যাতে সে এটি
সংরক্ষণ, প্রচার এবং পরবর্তী প্রজন্মের
কাছে সংক্রমিত করতে পারে।
6. বুদ্ধিবৃত্তিক ও
শারীরিক উন্নয়ন: শিক্ষার লক্ষ্য হল
শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাতে সে তার অন্তর্নিহিত এবং সৃজনশীল
শক্তি বিকাশ করতে পারে এবং সেইসাথে পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে পারে। শিক্ষার
লক্ষ্য হল শিশুর শারীরিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। শারীরিকভাবে উন্নত শিক্ষার্থী তাদের
জীবনের লক্ষ্যগুলি দ্রুত অর্জন করতে পারে।
7. অখণ্ডতা ও ঐক্যের
বিকাশ: আদর্শবাদীরা বিশ্বাস
করেন যে সমস্ত বৈচিত্র্যের মধ্যে একটি অপরিহার্য ঐক্য বিদ্যমান। জাতি, লিঙ্গ, বর্ণ এবং ধর্মের
ভিত্তিতে সমাজে পার্থক্য রয়েছে, তবে ঈশ্বর সমস্ত
মানবতায় উপস্থিত। শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্যের অনুভূতি বিকাশ করা
হয়।
8. নৈতিক মূল্যবোধের
বিকাশ: শিক্ষার মাধ্যমে
শিশুর ইচ্ছাশক্তি বিকাশ করা উচিত যাতে সে সৎ পথে চলতে এবং খারাপ থেকে দূরে থাকতে
সক্ষম হয়। সত্য, সৎতা এবং সৌন্দর্যের
সঠিক প্রশংসার মাধ্যমে এই শক্তি বিকাশ করা যায় যা সর্বোচ্চ নৈতিক মূল্যবোধ।
9. শিক্ষার সার্বজনীনতা: প্রতিটি শিশুর শিক্ষা পাওয়ার অধিকার থাকা উচিত।
এটি সার্বজনীন হওয়া উচিত কারণ সমস্ত মানুষ ঈশ্বরের সমান সন্তান।
আদর্শবাদ
এবং পাঠ্যক্রম: আদর্শবাদীরা
পাঠ্যক্রমের উন্নয়নের সময় চিন্তা, অনুভূতি, আদর্শ এবং মূল্যবোধের বেশি গুরুত্ব দেয় শিশুর কার্যকলাপের
চেয়ে। এটি ধর্ম, নীতিশাস্ত্র, সঙ্গীত এবং শিল্পকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এই পাঠ্যক্রমে
শুধুমাত্র সেই বিষয়গুলিকে জোর দেওয়া হয়েছে যা ব্যক্তিত্ব উন্নয়নে সহায়ক। এই
পাঠ্যক্রমে সেই বিষয়গুলিকে বেশি গুরুত্ব দেয় যা মানব সংস্কৃতি এবং সভ্যতার
কৃতিত্বকে প্রতিফলিত করে। এস্থেটিক এবং নৈতিক
উন্নয়নের জন্য হার্বার্ট ইতিহাস, শিল্পকলা, সঙ্গীত, কবিতা, নীতিশাস্ত্র এবং ধর্মের মতো বিষয়গুলিকে প্রাধান্য
দিয়েছেন। শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নের জন্য পাঠ্যক্রমে সাহিত্য, ভাষা, বিজ্ঞান, সামাজিক শিক্ষা এবং গণিত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রসের মতে, মানুষ কেবল শারীরিকভাবে সুস্থ এবং স্বাস্থ্যের সময়েই
আধ্যাত্মিকভাবে বিকশিত হতে পারে। এই দর্শন একটি সুস্থ দেহে সুস্থ মনের উপর জোর
দেয়। শারীরিক কার্যক্রমের মাধ্যমে শরীরকে সঠিকভাবে কার্যকরী অবস্থায় রাখা
অপরিহার্য। আদর্শবাদীরা স্বাস্থ্যবিধি,
শারীরবিদ্যা, শরীরচর্চা এবং অ্যাথলেটিক্স অধ্যয়নের উপর গুরুত্ব দেন।
আদর্শবাদ
এবং শিক্ষণ পদ্ধতি:
আদর্শবাদীরা
পরামর্শ দেন যে পদ্ধতিটি শিশুদের সমস্ত অন্তর্নিহিত ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ এবং স্ব
উপলব্ধির জন্য অভিযোজিত হওয়া উচিত। আদর্শবাদীরা ব্যক্তি এবং সামাজিক লক্ষ্যগুলির
মধ্যে সমন্বয়ে বিশ্বাস করে। শিশুটির বিকাশের জন্য একটি মুক্ত পরিবেশ প্রদান করা
উচিত এবং তার/তার শিক্ষাকে বর্তমান অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত হওয়া উচিত।
আদর্শবাদীরা নির্দেশনা, কার্যক্রম এবং
অভিজ্ঞতার উপর জোর দেয়।
নির্দেশনা: এখানে ব্যবহৃত 'নির্দেশনা' শব্দটি শিক্ষামূলক
নির্দেশনাকে বোঝায় যা হার্বার্ট দ্বারা শিক্ষা করার জন্য অপরিহার্য বলে বিশ্বাস
করা হয়। কিন্তু নির্দেশনা মানে শিশুর মস্তিষ্ককে বিভিন্ন তথ্যের টুকরো দিয়ে ভরাট
করা নয়। এটি শিশুর মনের একটি পরিবর্তন এবং পরিমার্জন বোঝায়। এজন্য এটি অপরিহার্য
যে শিক্ষক সহানুভূতিশীল নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। আদর্শবাদীরা বিশ্বাস করে যে
সমস্ত ধরণের প্রশিক্ষণ স্কুলে প্রদান করা উচিত।
কার্যক্রম: আদর্শবাদীরা সুপারিশকৃত শিক্ষাপদ্ধতি কার্যক্রমের
উপর ভিত্তি করে। শিশুটি করে শিখতে হবে। সৃজনশীল কার্যক্রম প্রশ্নের চেয়ে অনেক
বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সৃজনশীল কার্যক্রমটি স্বাভাবিক, ধারাবাহিক এবং প্রগতিশীল হওয়া উচিত। মানসিক কার্যকলাপের মাধ্যমে শিশুটি আনন্দের
সাথে শেখে এবং এটি তার ব্যক্তিত্বের বিকাশেও সহায়ক হয়।
অভিজ্ঞতা: আদর্শবাদীরা অভিজ্ঞতার উপরও জোর দেয়। প্রতিটি
শিক্ষার্থীর সমস্ত শিক্ষার ভিত্তি তার/তার নিজের অভিজ্ঞতার উপর হওয়া উচিত।
অভিজ্ঞতার জন্য স্বাধীনতা একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত। আদর্শবাদীরা বিশ্বাস করে
স্বাধীনতা শিক্ষার একটি অপরিহার্য অংশ তবে মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ নয়, বরং নিয়ন্ত্রিত এবং নির্দেশিত। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী
উভয়ই সক্রিয় থাকা উচিত এবং তাদের অভিজ্ঞতার পারস্পরিক বিনিময়ে নিযুক্ত থাকা
উচিত।
আদর্শবাদ
এবং শৃঙ্খলা:
আদর্শবাদীরা
বিশ্বাস করে যে শৃঙ্খলা ছাড়া শিশুর আধ্যাত্মিক বিকাশ হতে পারে না। তারা
প্রকাশমূলক শৃঙ্খলার তুলনায় ইম্প্রেশনিস্টিক শৃঙ্খলাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তারা
জোর দিয়ে বলে যে শিক্ষক তার/তার স্নেহময় এবং সহানুভূতিশীল আচরণের মাধ্যমে শিশুর
কাছ থেকে সম্মান অর্জন করা উচিত এবং তার/তার প্রশংসনীয় আদর্শের মাধ্যমে শিশুকে
প্রেরণা দেওয়া উচিত। আদর্শবাদীরা নিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা এবং কঠোর শৃঙ্খলায়
বিশ্বাস করে। শিশুদের স্বাধীনতার উপর নিয়ন্ত্রণের শর্ত সহ্য করতে হবে। স্বজ্ঞা
এবং স্ব বিশ্লেষণ হল প্রধান শৃঙ্খলাগত উপাদান। শৃঙ্খলা শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে
দেওয়া উচিত নয়। শিক্ষক তাদের স্ব জ্ঞান মাধ্যমে আত্ম শৃঙ্খলা বিকাশে সহায়তা করা
উচিত। আদর্শবাদীরা শৃঙ্খলায় বিনয়, সৌজন্য, আনুগত্য এবং অধীনতাকে মিলিত করতে চায়।
আদর্শবাদ
এবং শিক্ষক:
আদর্শবাদ
শিক্ষকদের একটি বিশেষ ভূমিকা প্রদান করে। এটি শিক্ষকদের আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক
হিসাবে বিবেচনা করে।আদর্শবাদীরা পরামর্শ দেন যে পদ্ধতিটি শিশুর সমস্ত অন্তর্নিহিত
ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ এবং স্ব উপলব্ধির জন্য অভিযোজিত হওয়া উচিত। আদর্শবাদীরা
ব্যক্তি এবং সামাজিক লক্ষ্যগুলির মধ্যে সমন্বয়ে বিশ্বাস করে। শিশুটির বিকাশের
জন্য একটি মুক্ত পরিবেশ প্রদান করা উচিত এবং তার/তার শিক্ষাকে বর্তমান অভিজ্ঞতার
সাথে সম্পর্কিত হওয়া উচিত। আদর্শবাদীরা নির্দেশনা, কার্যক্রম এবং অভিজ্ঞতার উপর জোর দেয়।
নির্দেশনা: এখানে ব্যবহৃত 'নির্দেশনা' শব্দটি শিক্ষামূলক
নির্দেশনাকে বোঝায় যা হার্বার্ট দ্বারা শিক্ষা করার জন্য অপরিহার্য বলে বিশ্বাস
করা হয়। কিন্তু নির্দেশনা মানে শিশুর মস্তিষ্ককে বিভিন্ন তথ্যের টুকরো দিয়ে ভরাট
করা নয়। এটি শিশুর মনের একটি পরিবর্তন এবং পরিমার্জন বোঝায়। এজন্য এটি অপরিহার্য
যে শিক্ষক সহানুভূতিশীল নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। আদর্শবাদীরা বিশ্বাস করে যে
সমস্ত ধরণের প্রশিক্ষণ স্কুলে প্রদান করা উচিত।
কার্যক্রম: আদর্শবাদীরা সুপারিশকৃত শিক্ষাপদ্ধতি কার্যক্রমের
উপর ভিত্তি করে। শিশুটি করে শিখতে হবে। সৃজনশীল কার্যক্রম প্রশ্নের চেয়ে অনেক
বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সৃজনশীল কার্যক্রমটি স্বাভাবিক, ধারাবাহিক এবং প্রগতিশীল হওয়া উচিত। মানসিক কার্যকলাপের মাধ্যমে শিশুটি
আনন্দের সাথে শেখে এবং এটি তার ব্যক্তিত্বের বিকাশেও সহায়ক হয়।
অভিজ্ঞতা: আদর্শবাদীরা অভিজ্ঞতার উপরও জোর দেয়। প্রতিটি
শিক্ষার্থীর সমস্ত শিক্ষার ভিত্তি তার/তার নিজের অভিজ্ঞতার উপর হওয়া উচিত।
অভিজ্ঞতার জন্য স্বাধীনতা একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত। আদর্শবাদীরা বিশ্বাস করে
স্বাধীনতা শিক্ষার একটি অপরিহার্য অংশ তবে মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ নয়, বরং নিয়ন্ত্রিত এবং নির্দেশিত। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী
উভয়ই সক্রিয় থাকা উচিত এবং তাদের অভিজ্ঞতার পারস্পরিক বিনিময়ে নিযুক্ত থাকা
উচিত।
আদর্শবাদ
এবং শৃঙ্খলা:
আদর্শবাদীরা
বিশ্বাস করে যে শৃঙ্খলা ছাড়া শিশুর আধ্যাত্মিক বিকাশ হতে পারে না। তারা
প্রকাশমূলক শৃঙ্খলার তুলনায় ইম্প্রেশনিস্টিক শৃঙ্খলাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তারা
জোর দিয়ে বলে যে শিক্ষক তার/তার স্নেহময় এবং সহানুভূতিশীল আচরণের মাধ্যমে শিশুর
কাছ থেকে সম্মান অর্জন করা উচিত এবং তার/তার প্রশংসনীয় আদর্শের মাধ্যমে শিশুকে
প্রেরণা দেওয়া উচিত। আদর্শবাদীরা নিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা এবং কঠোর শৃঙ্খলায়
বিশ্বাস করে। শিশুদের স্বাধীনতার উপর নিয়ন্ত্রণের শর্ত সহ্য করতে হবে। স্বজ্ঞা
এবং স্ব বিশ্লেষণ হল প্রধান শৃঙ্খলাগত উপাদান। শৃঙ্খলা শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে
দেওয়া উচিত নয়। শিক্ষক তাদের স্ব জ্ঞান মাধ্যমে আত্ম শৃঙ্খলা বিকাশে সহায়তা করা
উচিত। আদর্শবাদীরা শৃঙ্খলায় বিনয়, সৌজন্য, আনুগত্য এবং অধীনতাকে মিলিত করতে চায়।
আদর্শবাদ
এবং শিক্ষক:
আদর্শবাদ
শিক্ষকদের একটি বিশেষ ভূমিকা প্রদান করে। এটি শিক্ষকদের আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক
হিসাবে বিবেচনা করে। শিক্ষক এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেন যেখানে শিক্ষা ঘটে। তাকে
শিক্ষার্থীকে প্রায় সম্পূর্ণতার দিকে নির্দেশ করতে হবে। আদর্শবাদী শিক্ষক হলেন
একজন দার্শনিক, বন্ধু এবং পথপ্রদর্শক।
জেন্টাইলের মতে – একজন শিক্ষক "সঠিক আচরণের আধ্যাত্মিক প্রতীক"।
ফ্রোয়েবেলের মতে, বিদ্যালয় হল একটি
উদ্যান, শিক্ষক হলেন একজন সতর্ক মালী
এবং শিশু হল একটি কোমল গাছ। গাছটি সাহায্য ছাড়াই বাড়তে পারে, তবে ভাল মালী দেখেন যে গাছটি সম্ভবত সেরা পরিপূর্ণতায়
বেড়ে উঠছে। অরবিন্দের মতে – প্রকৃত শিক্ষার প্রথম নীতি হল যে কিছু শেখানো যায়
না। শিক্ষক হলেন সাহায্যকারী এবং পথপ্রদর্শক। তার কাজ হল পরামর্শ এবং পথপ্রদর্শন
করা, চাপিয়ে দেওয়া নয়।
আদর্শবাদের
সমালোচনা:
·
আদর্শবাদ দৈনন্দিন জীবনের বাস্তব সমস্যাগুলি এড়িয়ে যায়।
·
আদর্শবাদ বর্তমান বাস্তবতাগুলি এড়িয়ে যায় এবং শিশুকে
পরবর্তী জীবনের জন্য প্রস্তুত করে।
·
আদর্শবাদ চিন্তা এবং মানসিক কার্যকলাপের উপর বেশি জোর দেয়।
এটি অপ্রয়োজনীয়ভাবে বুদ্ধিবৃত্তিকতার গুরুত্ব বাড়ায়।
·
আদর্শবাদী শিক্ষা শিশুর চেয়ে শিক্ষকের উপর বেশি গুরুত্ব
দেয়।
·
আদর্শবাদী শিক্ষার পদ্ধতি রোট মেমরির উপর জোর দেয়।